ক্রিং ক্রিং ক্রিং ফোনটা বেজেই চলছে। মাহিন ফোনটি রিসিভ করতেই ওপার থেকে ইকবাল বলে মামা কোথায় তুই?
মাহিন: এইতো মামা স্কুল থেকে এলাম, কিছু কি বলবি।
ইকবাল: রুদ্র দাঁ' র ছাদে আয় বিকালে আড্ডা দিবো, নসু মামা ও থাকবে। আবার মৃন্ময়ী রা আসছে।
মাহিন: আচ্ছা দেখি কি করি।
রুদ্র'র ছাদে বিকালে আড্ডা জমে উঠেছে, মাহিন, ইকবাল রুদ্র দাঁ সবাই এসেছে। একটু পরে এসেছে মৃন্ময়ী আর তার বান্ধবী জোজো ও শৈপিল। মৃন্ময়ীকে দেখে মাহিন একটু হোচট খায়। কারন সে আগে স্কুল ড্রেসে তাকে দেখেছে কিন্তু এভাবে শাড়ি পরা কখনোই দেখেনাই। মাহিন মৃন্ময়ীর সামনে অনেকটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে।
শাহেদ স্যারের প্রাইভেট পড়ে বের হলেই ঝুম বৃষ্টি, মাহিন ছাতা নেয়নি সেদিন। কেউ কেউ বাসায় না গিয়ে বৃষ্টি কমার অপেক্ষায় প্রাইভেট শেষ হলেও রুমে অপেক্ষা করছিলো কেউ বা চলে গেছে। মাহিন বারান্দায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখছিলো। এমন সময় কেউ এসে পাশে দাড়ালো। মাহিন পরিচিত সেন্ট পেয়ে মুখ ঘুরিয়েই দেখে মৃন্ময়ী।
মাহিন তোতলায় আর বলে, কি খবর, কেমন আছো? মৃন্ময়ী হেসে বলে এই তো ভালো, এরকম তোতলাচ্ছো কেনো, আমি কি বাঘ না ভালুক। বলে হাসতে থাকে। মাহিনের বুকে আবারো অদৃশ্য ঝড়। কোমরে দুই হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা লাস্যময়ী মৃন্ময়ীর দিকে তাকিয়ে থেকে ঝড়ের প্রাবল্য অনুভব করে মাহিন।
মৃন্ময়ী বলে, তোমার ব্যাগে তো ছাতা আছে, আমাকে পৌঁছে দিয়ে আসোতো বাসায়, জরুরি কিছু কাজ আছে। মাহিন ঠিক আছে বলেই ছাতা বের করে মৃন্ময়ী কে নিয়ে রওনা হয়। কিন্তু মাহিন একটু দূরে দূরে হাটছিলো। হঠাৎ মৃন্ময়ী ওর হাত টেনে ধরে গায়ের সাথে মিশিয়ে দিয়ে বলে বৃষ্টিতে ভিজে যাবেতো। বলে গায়ে গা মিশিয়ে চলতে থাকে। মাহিনের তো বুকে হাতুড়ি পেটা হচ্ছে। বৃষ্টির জল তার গায়ে না পড়লেও মৃন্ময়ীর ছোঁয়ায় তার অন্তরে ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সেই ঝড় তার বুক পর্যন্ত কাপিয়ে দিচ্ছে। শুধু মনে হচ্ছে এই বৃষ্টি যদি অনন্তকাল ধরে চলতো আর মৃন্ময়ীও তার পাশে এভাবে থাকতো চিরকাল। মৃন্ময়ীকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে ফিরে আসার সময় মৃন্ময়ী বলে "মাহিন তোমার ফোন নাম্বার টা দিয়ে যাও তো কখনো ইচ্ছে হলে কল দিতে হতে পারে"। মাহিন ফোন নাম্বার দিয়ে চলে আসে।
সেদিন রাতে, মাহিনের ফোনে হোয়াটসঅ্যাপে একটা মেসেজ আসে, " আমি মৃন্ময়ী" মাহিন তো খুবই অবাক, সে সাথে সাথে টেক্সট করে কেমন আছো?
ওপাশ থেকে উত্তর আসে এইতো ভালো, তুমি কেমন?
মাহিন লিখে- ভালো আছি, এদিকে বুকে তার হাতুড়ি পেটা হচ্ছে।
এভাবে চলতে থাকে টেক্সট। প্রতি রাতেই। অজস্র মেসেজে তাদের সময় কিভাবে মাঝরাত হয়ে যায়। তার পর ঘুমিয়ে যায় মাহিন।
এরমাঝে বন্ধু ইকবালের জন্মদিন। আয়োজন করা হয় ইয়োলো রেস্টুরেন্টে। মাহিন, মৃন্ময়ী, মৃন্ময়ীর দুই বান্ধবী জোজো আর শৈপিল, নসু মামা আর রুদ্র দাঁ সবাই আসে। কেক কাটা হয়। ইকবাল আর মৃন্ময়ী খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে একে অপরকে কেক খাইয়ে দেয়। এটা দেখে সবাই হাত তালি দেয় কিন্তু মাহিন হাত তালি দিলেও অনুভব করে তার বুকের ভেতর কেমন যেনো ফাকা ফাকা লাগতেছে। তাদের কেক পার্টি শেষ হলে ইয়োলো রেস্টুরেন্টের কার্ণিশে তারা ছবি তুলতে যায়। ছবি তুলার জন্যই এই কার্ণিশ টা করা হয়েছে।
এখানে উঠার সময় ইকবাল, নসু মামা, রুদ্র দাঁ সকলেই উঠে গেলেও মৃন্ময়ীদের উঠতে একটু কষ্ট হচ্ছিলো চিকন যায়গা দিয়ে। মাহিন হাত বাড়িয়ে হেল্প করতে গেলে জোজো হঠাৎ বলে উঠে মেয়ে দেখলেই সাহায্য করতে আসো আগ বাড়িয়ে। এগুলা আমরা বুঝি। সব ছেলেদেরই আমার চেনা আছে। এ কথা শুনে সকলেই হেসে উঠে।
নসু মামা হঠাৎ বলে মাহিন মেয়েদের একটু বেশিই হেল্প করতে চায়। সকলেই হাসে।
এদিকে সব শুনেও মাহিন চুপ চাপ ই থাকে। সে ৪ তলার কার্ণিশে দাঁড়ানো মৃন্ময়ীর বাতাসে চুল উড়া দেখছে। সে মনে মনে ভেবে নেয় যে মৃন্ময়ীকে সে একদিন তার মনের কথা বলবে।
গ্রীষ্মের বন্ধ চলছে। সবাই বাসায় যার যার মতো পড়াশোনা আর ঘুরাঘুরি করে সময় কাটাচ্ছে। আবার একদিন ইকবাল তাদেরকে আড্ডা দেওয়ার জন্য ডাকে রুদ্র দাঁর বাসার ছাদে। সেদিন বিকালে মাহিন আসে, নসু মামা ও আসে, মৃন্ময়ীদের আসবার কথা থাকলেও তারা তখনও পৌঁছায়নি। নসু মামা বয়সে রুদ্র দাঁর চেয়ে বড় হলেও অনেক আড্ডা প্রিয় একজন মানুষ তাই সহজেই স্কুল পড়ুয়া ছেলেগুলোর সাথে মিশে থাকতে পারে। রুদ্র দাঁ তার সিগারেট ধরিয়ে একটু পরে মাহিনের হাতে দিলে মাহিন সেটা ইকবাল কে এগিয়ে দেয়। কারন সিগারেট খাওয়ার অভ্যেস তার নেই। এটা দেখে নসু মামা একটু জোক্স করে বলে আরে এক টান নিয়েই দেখো, একটু আধটু খেলে সবাই মরে যায়না। সবাই হেসে উঠে, মাহিন কোনোভাবেই নিতে চায়না কিন্তু সবার জোরাজুরিতে এক টান নিতেই সেখানে চলে আসে মৃন্ময়ীরা। এদিকে ওদের দেখে একটু অপ্রস্তুত হয়ে মাহিন কাশতে থাকে। মৃন্ময়ীরাও এসে সিগারেট ধরায় আর হাসাহাসি করতে থাকে।
সেদিন সন্ধ্যা নামলে মৃন্ময়ীরা চলে যায় আর ইকবাল ও মাহিন বাসার পথ ধরে। যেতে যেতে ইকবাল তাকে মৃন্ময়ীর অনেক গল্প শুনায়। মাহিন সব চুপচাপ শুনে আর ভাবে ইকবাল এতো কথা কিভাবে জানে। তাহলে কি ইকবালের সাথে মৃন্ময়ীর কোনো সম্পর্ক আছে? সে সাহস করে ইকবাল কে প্রশ্ন টা করতে পারেনা, কারন ইকবালের উত্তর যদি হ্যা হয় তাহলে সে কোনোভাবেই এটা মেনে নিতে পারবেনা। অবশ্য ইকবাল নিজে থেকেই বলে যে মৃন্ময়ীকে সে ভালোবাসে।
ইকবালের কাছ থেকে এমন কথা শুনার পরে মাহিন অনেকটাই হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। কিন্তু ইকবালকে সে কিছুই বলেনা। কারন তার কাছে ভালোবাসার তুলনায় বন্ধুত্বটা অনেক বেশি কিছু ছিলো। সেদিন রাতে বাসায় ফিরে মাহিন চুপচাপ করে ভাবতে থাকে তার বিগত সময় গুলোর কথা। মৃন্ময়ীর মেসেজের রিপ্লাই ও দেয়না সেদিন মাহিন।
মৃন্ময়ী সকাল থেকেই মাহিন কে কল দিচ্ছে কিন্তু মাহিন কল।রিসিভ করেনা। মাহিন টেবিলে বসে দেখছে একের পর এক কল গুলো বেজে বেজে শেষ হয়ে যাচ্ছে কিভাবে।
কিছুক্ষণ পরে হঠাৎ একটা আননোন নাম্বারের ফোন। মাহিন দ্রুত কল রিসিভ করলো কারন দারাজ থেকে তার একটা পার্সেল আসবার কথা। কিন্তু কল রিসিভ করতেই ওপার থেকে ভেসে এলো ঝাঝালো কন্ঠ মেয়েলী গলায়, "তোকে কত বার কল দিচ্ছি দেখস না, নাকি ইচ্ছে করেই কল ধরিস না, যে এখন কল দেওয়া মাত্র রিসিভ করলি?"
মাহিন স্তদ্ধ হয়ে গেলো, তার বুঝতে বাকি রইলোনা এটা মৃন্ময়ী। ওদিক থেকে মৃন্ময়ী কথা বলেই যাচ্ছে। মাহিনের কানে কথা যাচ্ছে বটে কিন্তু জবাব দেওয়ার মতো কিছু সে খুঁজে পাচ্ছেনা। মাহিন কে একেবারে চুপ থাকতে দেখে মৃন্ময়ী বললো, কিরে তুই কথা বলস না কেনো?
এবার মাহিন বললো, "বলার অনেক কিছুই তো ছিলো, কিন্তু আর বলা হবেনা" বলেই কল কেটে দিলো।
মৃন্ময়ী হতভম্ব হয়ে গেলো, আর ভাবলো, তাহলে কি এদিকে অজান্তেই কেউ জ্বলে পুড়ে গেলো, কিন্তু সে আগে দেখেও বুঝলোনা।
অনেকদিন আর আড্ডায় যায়না মাহিন। স্কুল আর বাড়ি এভাবেই কাটছে সময়। কিছুদিন পরে, ইকবাল মাহিনকে ফোন দিলো।। ফোন দিয়ে বললো তোর সাথে কিছু কথা আছে রে আমার। সন্ধার পরে প্লিজ দেখা কর। মাহিন রাজি হলো। কিন্তু এক বুক হতাশা তার ভেতর। ইকবাল কি বলবে সেটা নিয়েই সে দুশ্চিন্তায় আছে।
সন্ধার পরে চায়ের দোকান থেকে দুই কাপ চা নিয়ে একটু দূরে দাঁড়িয়ে মাহিন ইকবালকে জিজ্ঞাসা করলো, বল কি বলবি।
ইকবাল, "তুই কি জানিস মৃন্ময়ীর সাথে আমার সম্পর্ক চলছে?"
মাহিন, "হ্যা জানি তো, কেনো কি হয়েছে?"
ইকবাল, "মৃন্ময়ীর সাথে আমি আর সম্পর্ক রাখতে চাইনা, ও আমাকে বুঝেইনা, সম্পর্কের গভীরতাই বুঝেনা ও"
মাহিনের মনে মনে কেনো জানি বসন্তের হাওয়া বইতে লাগলো, তবুও মুখের ভাব রেখেই জিজ্ঞাসা করলো, "কি জন্য, সেটা তো বল, দেখি তোকে হেল্প করা যায় কিনা"
ইকবাল, "না-রে তেমন কিছু নয়। একটা রিলেশনে বর্তমান যুগে কিছু পার্সোনাল সময়ের প্রয়োজন আছে। যেহেতু ভালোবাসি তাই কিছুটা একান্ত সময় তো চাইতেই পারি, কিন্তু ও একেবারেই চুপ চাপ কিছুতেই আমাকে সুযোগ দেয়না। অথচ তার নাকি তার কাজিনের সাথে শারিরীক সম্পর্ক ও ছিলো"
মাহিন কেমন যেনো চুপসে গেলো, তবুও বললো, "মামা কথা বলে দেখি, কি করা যায়।"
ইকবাল, "তুই আমার পক্ষ নিয়ে আর কথা বলতে যাসনা, তুই কথা বলবি বল। আমি ব্রেক আপ করে নিয়েছি"
মাহিন আগের মতোই আড্ডায় যায়না। সপ্তাহ খানেক পর আবার মৃন্ময়ীর ফোন,
ফোন টা দেখতেই মাহিন রিসিভ করলো, "হেলো"
ওদিক থেকে কন্ঠস্বরে আকুলতা, "দেখা করবে একটু সন্ধার পরে সাগুফতায়"
মাহিন না বলতে যেয়েও পারলোনা, বললো, "ঠিক আছে আসবো আমি"
সন্ধার পরে সাগুফতায় দুজনে আসলো, মৃন্ময়ী কেমন যেনো শুকিয়ে গেছে, নীল একটা শাড়ি পরে এসেছে দেখা করতে। মাহিন তাকে দেখে যেনো চোখ ফেরাতে পারছিলোনা। জিজ্ঞাসা করলো, কেমন আছো মেঘা।
মৃন্ময়ী অবাক হয়ে বললো, মেঘা মানে, আমি তো মৃন্ময়ী।।
মাহিন বললো, কোনো এক বাদল দিনে এক মেঘবালিকার সাথে হেটেছিলাম বৃষ্টিস্নাত রাস্তায়। তার ছিলো মেঘ কালো চুল, সেদিন ই মনে হয়েছিলো এই মেঘবালিকাটাকে চিরকাল পাশে নিয়ে চলতে চাই জীবনের শেষ পর্যন্ত।
মৃন্ময়ী কথা বলছেনা, চুপ করে আছে।
মাহিন আবারো বললো, সে কি চুপ করেই থাকবে না-কি আমার সাথে।
মৃন্ময়ী বললো, "তুমি কি বলতে চাইছো আমি জানি, কিন্তু তোমার বন্ধু ইকবাল বলেছেতো তোমাকে যে আমি ভালো মেয়ে নই, শুধু তোমাকেই না সে সকলকেই বলেছে এমন কথা"
মাহিন বললো, আমি কি বলেছি তোমায় এসব?
মৃন্ময়ী বললো, না- কিন্তু কেনো তুমি বলছোনা
মাহিন বললো, আমি তোমার অতীত নিয়ে কি করবো, আল্লাহ চাইলে ক্ষমা করে দিবেন। তুমি যদি ভুল করেও থাকো, তবুও এখন তো করছোনা
মৃন্ময়ী বললো, একটা সত্যি কথা বলি তোমাকে, যেহেতু তুমি বিশ্বাস করেছো আমায়। আমার আসলে এমন কোনো ঘটনাই নেই। বরং তোমার বন্ধু আমাকে তার সাথে একান্ত সময় কাটাতে বলছিলো তাই আমি তাকে বাঁধা দেওয়ার জন্যই এমন টা বলেছিলাম।
মাহিন বললো, তাহলে তো আলহামদুলিল্লাহ।
মৃন্ময়ী বললো, "কি চলে যাবে না-কি?"
মাহিন বললো, "হ্যা যাবোই তো, কিন্তু আজ যে শুনতে চাই আমার বুকে একটা পাখিকে আটকাতে চাই, কিন্তু সেই খাচার তো দরজা নেই। পাখি কি থাকবে আজীবন, নাকি বেরিয়ে যাবে। "
মৃন্ময়ী চুপ হয়ে থাকলো। কিছুই বলছেনা। মাথা নিচু করে আছে
মাহিন তার দিকে তাকিয়ে দেখে মৃন্ময়ীর চোখে পানি, কিছুই বলছেনা। মাহিন তার হাত দিয়ে চোখের পানি মুছে দিলো আর বললো, "চলোনা আমার মেঘবালিকা তোমায় নিয়ে হাটি চিরকাল। তোমায় পরম যত্নে বুকে ধারণ করে রাখবো চিরকাল, কখনো ছেড়ে যাবেনা তো আমায়"
মৃন্ময়ী মাহিনের হাত ধরলো আর বললো, চলো যাই।।
তার পর কেটে গেলো জীবনের ১২ টি বসন্ত। ইকবাল মালয়েশিয়া থেকে এসে মাহিনের বাসায় বেড়াতে এসেছে। মাহিন এখন সরকারী চাকরি করে। মাহিনের বাসায় মৃন্ময়ীকে দেখে তো সে অবাক।
খাওয়া দাওয়া শেষে এক সময় ফাঁকা পেয়ে ইকবাল মাহিনকে বললো, "কিরে মাহিন তোকে সব বললাম ওর চরিত্র সম্পর্কে, তবুও কেমনে কি এটা করলি"
মাহিন বললো, "সবাই তো জিততে চায়, আমি না হয় মৃন্ময়ীকে নিয়ে ঠকেই গিয়েছি" মৃন্ময়ী সেই সময় রুমে ঢুকেই সব শুনতে পেলো। ইকবাল কথা না বাড়িয়ে চলে গেলো।
সেদিন রাতে ছাদে চন্দ্রালোকিত চারিদিক।। একটা দোলনাই মাহিন আর মৃন্ময়ী দুই কাপ চায়ে ঠোট লাগিয়ে করছে রাত্রি বিলাস। নীল শাড়ি চাঁদের আলোয় আরো কালো হয়ে ফুটে উঠছে মৃন্ময়ীর শরীরে। তাকে করে তুলেছে অপার্থিব অপরুপা।। চারিদিকে শুনশান, যেনো চায়ের কাপেও জমেছে অজস্র নিরবতা। মাহিন তাকিয়ে আছে মৃন্ময়ীর দিকে, সেই মুগ্ধতা, যা এক যুগ পরেও পরিবর্তন হয়নাই, তৃপ্তি মেটেনাই।
হঠাৎ নিরবতা ভেঙে মৃন্ময়ী প্রশ্ন করলো, "আমাকে নিয়ে তাইলে ঠকেই গেছো তাইনা"
মাহিন চায়ের কাপ নামিয়ে রাখলো দোলনার পাশে, আর বললো, "ঠকেই তো গিয়েছি, মানুষ বার বার নতুনের মায়ায় পড়ে, কত বৈচিত্র্য আনে জীবনে। আর আমি, দেখো এক মেঘবালিকার মায়ায় পড়ে প্রতিদিন নতুন নতুন করে তারই মায়াই পড়ি"
মৃন্ময়ী মাহিনের ঠোটে হাত দিয়ে বললো, থামো এত বলতে নেই। আমার ভয় হয় যদি সময় শেষ হয়ে যায়।
মাহিন মুচকি তাকে বুকে টেনে নেয়, দুজনেই ঘুমিয়ে যায় দোলনায়। সৃষ্টিকর্তার অপার রহমত ঝরে পড়ে তাদের উপর। লেখকের শত সহস্র শুভকামনা তাদের জন্য।
Writer: Md. Abidur Rahman, DU-IBA, based on a story of Mahbub Alam
No comments:
Post a Comment