রাত বাজে ৩ টা,, ৬ তলায় থাকা একটি ব্যালকনি থেকে কেউ একজন রাতের আকাশ দেখছে। পাশের বাসার বিড়াল টি মাঝে মাঝে মিউ মিউ করছে সম্ভবত ব্যালকনিতে কাউকে দেখেই করছে। সামনের বাসার ছাদে ফুটে থাকা হাস্নাহেনা ফুলের সেন্ট আসছে। চাঁদের আলোয় আলোকিত চারিদিক। মায়াময় লাগছে সবকিছু। ছেলেটি আনমনে সব যেনো দেখছে। যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই রাতের নিরবতা পূর্ণ সৌন্দর্যের প্রেমে মজেছেন কবি সাহিত্যিক রা। কোনো দিকে খেয়াল নেই। হঠাৎ নিস্তব্ধতা ভেঙে ঘেউ ঘেউ করে উঠলো দূরের দুটি কুকুর।
এমন সময়-- "শিশির, ঐ শিশির! তুমি কই?" রুমের ভেতর থেকে ডাক দিয়ে বললো একটি মেয়ে।
ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটি জবাব দিলো এইতো ব্যালকনিতে।
ভেতর থেকে আর জবাব এলোনা। কিছুক্ষণ পরে একটি মেয়েলী ছায়া রুমের ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে প্রশ্ন করলো, এই এতো রাতে এখানে কেনো। শরীর খারাপ করবে, ভেতরে চলো। বলে জবাবের অপেক্ষা না করেই একরকম টানতে টানতে ছেলেটিকে ভেতরে টেনে নিয়ে গেলো।
এতক্ষণ যাদের কথা বলছিলাম, তারা হলো সোনেলা আর শিশির। দুজনে বিয়ে করেছে সম্প্রতি। একই সাথে পড়তো দুজনেই। চোখাচোখি, বন্ধুত্ব, ভালোলাগা,,লুকোচুরি,, প্রণয় তার পর বিবাহ। ফলস্বরূপ দুই পরিবারের কেউই পুরোপুরি মেনে নেয়নি। তবে পরিস্থিতি বুঝাচ্ছে যে মেনে নিবে একসময়। তাদের সংসার খারাপ চলছেনা। শিশির জব করে, তাতে যা স্যালারি আসে, তাতে ভালোভাবেই চলে যায় দিন। বাসাভাড়া, খাওয়া দাওয়া সব মিলিয়ে ২০ হাজার টাকার মতো লাগে দুজনের সারা মাসে।
হাতে সামান্যই থাকে তবুও শিশির একে একে সোনেলার পছন্দ গুলা পুরণ করার চেষ্টা করে। সোনেলা কিছুই চায়না প্রয়োজনের বাইরে। অফিস থেকে আসার পরেই ফ্রেশ হয়ে শিশির সোনেলাকে বলে চলো একটু হেটে আসি। সোনেলাও ঝটপট রেডি হয়ে নেয়। বাসা থেকে বের হয়ে সোনেলাকে ফুচকা খাওয়ায় কোনোদিন, আবার কোনোদিন বা আইসক্রিম। অথচ শিশির কিছুই খায়না শুধু চা ছাড়া। কারন তার ওগুলা ভালো লাগেনা। মাঝে মাঝে সোনেলা জোর করে খাইয়ে দেয় কিছু। তার পর দুজনে দুজনের হাত মুঠি করে ধরে বাসায় ফিরে আসে৷
শিশির দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে পা ছড়িয়ে, সোনেলা এসে বিছানার অপর প্রান্তে বসে৷ শিশির কিছুক্ষণ পরে সোনেলাকে বলে, এই এদিকে এসো একটু কাজ আছে। সোনেলা মৃদু হেসে তার দিকে এগিয়ে যায়। কারন সে জানে শিশির কি করবে, এটা তার নিত্য দিনের অভ্যেস।
কাছে গেলেই শিশির সোনেলাকে টেনে শুইয়ে দিবে কোলের উপর। তার পর মাথার চুল গুলা খুলে দিবে। আস্তে আস্তে চুলে বিলি কাটবে আর গল্প করবে। আর একে একে প্রশংসা করবে সোনেলার চোখের। টুপ করে মুখ নিচু করে দু চোখে চুমু খাবে আর বলবে, তোমার চোখেই যে আমার মরন হয়ে যাবে গো ঘুমবেবি। সোনেলাকে অনেক আদুরে নামে ডাকে শিশির।
সোনেলা কৃত্তিম রাগ দেখিয়ে, মুখ ঘুরিয়ে বলবে- ধ্যাত, খালি আদিখ্যেতা, ভাল্লাগেনা।
শিশির আবার তাকে জাপটে ধরবে। মুখ ফিরায় নিবে তার পর সারা মুখে চুমু দিয়ে ভরে দিবে। আস্তে আস্তে সোনেলার মিথ্যা রাগ ভাঙ্গাবে।
এক বছর কেটে যায়। নভেম্বর মাস। বাচ্চা কনসিভ করেছে সোনেলা। শিশির খুব খুশি। সোনেলাকে বলে মাত্র বাচ্চা কনসিভ হয়েছে, সময় থাকতে চলোনা পাগলী ঘুরে আসি চট্টগ্রাম। সোনেলা খুব খুশি হয়ে যায়।
১১ই নভেম্বর, শিশির সেদিন রাতের টিকিট কাটে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে। রাত ১০:৪৫ এ গাড়ি। আরামবাগ কাউন্টার থেকে, Soudia Mercedes-Benz এ। সোনেলার আনন্দ যেনো আর ধরেনা। কারন সে এর আগে সাগর আর পাহাড় ছবিতেই দেখেছে শুধুমাত্র। আর সোনেলার আনন্দ দেখে শিশিরের মন পাগল হয়ে যাচ্ছে। রাত ৮:৩০ এ বাসা থেকে বের হয়ে দুজনে উবার নিয়ে চলে গেলো বাস কাউন্টারে।
শিশির দু প্যাকেট চিপস কিনলো, সাথে কোকাকোলা। গাড়িতে উঠার সাথে সাথেই শুরু হলো বৃষ্টি। সৌদিয়া বাস তার ক্ল্যাসিকাল স্পিডে চলা শুরু করলো। সোনেলা প্রচন্ড ভাবে ফিল করছিলো তার সময় গুলা। শিশিরের গায়ে মাথা রেখে বললো- "আচ্ছা শিশির আমি তোমার কে হই।"
শিশির তার মাথা তুলে দিলো। তার পর সোনেলার মুখ খানি নিজের দিকে ফিরিয়ে চোখে চোখ রেখে বললো, "তুমি আমার অক্সিজেন। আমার সবটুকুই তুমি। তুমি শুধু আমার কলিজার টুকরাই নও বরং পুরো কলিজাটাই তুমি।"
সোনেলার দুচোখে পানি, শিশির তার হাত দিয়ে পানি গুলা মুছে এনে নিজের মুখে মাখিয়ে নিলো। বললো, "এই পাগলী! কান্না করোনা, তোমার কান্না আমার সয়না লক্ষীটি, আমার বুক ভেঙে যায়, প্লিজ একটু হাসো।" ফিক করে হেসে দিলো সোনেলা। শিশির ও সোনেলাকে আলতো করে জড়িয়ে ধরলো। রাতের বৃষ্টি ভেজা পথ দিয়ে সাই সাই করে গাড়ি ছুটে চলছে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে।
রাত প্রায় ৪ টার দিকে চৌদ্দগ্রাম টাইমস্কয়ার হাইওয়ে রেস্টুরেন্টে গাড়ি থামলো ২০ মিনিটের জন্য। সোনেলা আর শিশির ও নামলো। সোনেলার হাত ধরে শিশির লেডিস ওয়াশরুমের সামনে এলো। সোনেলা ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এলো। দুজনে মিলে হালকা কিছু নাস্তা করলো। যদিও বুফে ফ্রি ছিলো টিকিটের সাথেই। কিন্তু শিশির আর সোনেলা সবসময়ই সংযমি। তার পর রেস্টুরেন্টের বাইরে এলো। এখন আর বৃষ্টি নেই। এমনিতেই শীতের শুরু তার উপরে বৃষ্টি, তাই প্রচুর কনকনে বাতাস। সোনেলা হালকা কাপছিলো। শিশির দু কাপ কফি নেয়। দুজনেই গরম কফিতে চুমুক দিয়ে গরম আর ঠান্ডার ফিলিংস নিতে থাকে। কফি শেষ করে একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে হাসে। শিশির বলে, "শুনো তোমার হাসিতে আমি আবার পাগল হয়ে যাবো। এতো মুগ্ধতা মায়া কেনো গো তোমার হাসিতে।"
সোনেলা লজ্জা পেয়ে আবার কৃত্তিম রাগের অভিনয় করে ধাক্কা দেয় শিশিরকে আর বলে, "চলো গাড়িতে উঠি। সময় শেষ"
------------------------------------------------------------
সকাল ৭ টার দিকে চট্টগ্রাম পৌঁছে গাড়ি। অলঙ্কার কাউন্টারে নেমে দুজনে সিএনজি নিয়ে চলে যায় টেকনিক্যাল মোড়ে। সেখান থেকে একটু দূরেই শিশিরের মামার বাসা। এই মামা অবশ্য শিশিরের বিয়ের কথা শুনার পর থেকেই পারিবারিক ভাবে দুজনকে এক করার চেষ্টা করছিলেন। তাই তার বাসায় যেতে শিশিরের সমস্যা নেই। আর আসবার আগেই শিশির আর সোনেলা জানিয়ে এসেছিলো এখানে।
তারা কিছু মিষ্টি আর ফল কিনে নেয়। তার পরে শিশিরের মামার বাসায় পৌঁছালে সেখানে তারা খুব উষ্ণ ভাবে তাদেরকে স্বাগতম জানায়। এতো আপ্যায়ন দেখে সোনেলা আর শিশির দুজনেই লজ্জা পায়।
যাই হোক, সারাদিন গল্প, টাইমলি খাওয়া দাওয়া আর এর মাঝে শিশিরের মামাতো বোন নীলার সাথে সোনেলার প্রচুর খাতির জন্মে যায়। সন্ধার দিকে সোনেলা শিশিরকে বলে, "চলোনা একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসি। রাতের শহর টা দেখে আসি।" শিশির রাজি হয়। দুজনে মামা মামিকে বলে বাইরে বের হতে গেলেই নীলা এসে আবদার করে তাকে সাথে নেওয়ার। শিশির কিছু বলার আগেই সোনেলা বলে, "সমস্যা নেই, রেডি হয়ে এসো।" নীলা ১০ মিনিটের মাঝে রেডি হয়ে চলে।এলো।
তিনজনে একটা সি এন জি নিয়ে চলে এলো দামপাড়া। সেখানে নেমে তারা ঝালমুড়ি খায়। সোনেলা আর নীলা যেনো মনে হচ্ছিলো দুই বান্ধবী। শিশির যে সাথে আছে তার কথা যেনো মনেই নেই। রাস্তায় পাশে থাকা হকারের কাছ থেকে সোনেলা এটা ওটা দেখে, এক গোছা লাল চুড়ি, নীল চুড়ি দেখে। তার পরে একটা পায়েল দেখে। হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখার পর সোনেলা কিছুই নেয়না, সব ফিরিয়ে দেয় দোকানীকে। শিশির সবই লক্ষ্য করে কিন্তু কিছুই বলেনা। ওদিকে নীলা এক গোছা চুড়ি নেয়, তার পর চুল বাধা ফিতা নেয়। নীলা বিল দিতে গেলেই সোনেলা বাধা দেয় বলে, আজ তোমার ভাইয়া আছে ভাইয়া দেবে- এই ভাইয়া বিল দাও। শিশির সোনেলার মাথায় গাট্টা মেরে বলে নীলাকে পেয়েই আমাকে ভাইয়া বলা হচ্ছে, বলে হেসে বিল দেয় দোকানীকে৷ তার পর সোনেলাকে বলে তুমি কিছু নিবেনা। সোনেলা বলে নাহ, লাগবেনা।
তার পর তারা ফুচকার দোকানে বসে। সোনেলা আর নীলাকে ফুচকা দিতে বলে শিশির বলে আমি একটু আসছি, বলে চলে যায়। শিশির যেতেই সোনেলা ভাবে, "কোথায় গেলো ও," তার পর আবার মনে মনে ভাবে হয়তো চাপ বেড়েছে।
তাদের খাওয়া হতে না হতে শিশির ফিরে আসে। তার পর নীলা আর সোনেলার হাতে দুটা প্যাকেট ধরিয়ে দেয়। শিশির নীলা কে বলে, "এই প্যাকেটে তোমার জন্য একটা জামা, আর মামার জন্য একটা পাঞ্জাবী আর মামির জন্য একটা শাড়ি আছে। কখনোতো আগে দেওয়া হয়নাই তাই আজ দিলাম।" নীলা এক গাদা সংকোচভরা গালে বলে, "ভাইয়া কি দরকার ছিলো এসবের।" সোনেলা নীলার পিঠ চাপড়ে দেয় আর বলে, "আরে সমস্যা নেই।" নীলা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।
তার পর শিশির সোনেলা কে বলে, "তোমার জন্য ও একটি শাড়ি আছে, বাসায় যেয়ে দেখিও"
ঐ রাতে তারা বাসায় ফিরে আসার পরে ফ্রেশ হয়ে রাতের খাবার খেয়ে নেয়। শিশির আর সোনেলাকে নীলা তার রুমটাই ছেড়ে দিলো। সে যেয়ে তার স্টাডিরুমে, সাময়িক রেস্ট নেওয়ার সিঙ্গেল রুমে ঘুমিয়ে গেলো। এদিকে সোনেলা রুমে আসতেই দেখলো শিশির তাকে দেওয়া শাড়ির প্যাকটি হাতে ধরে বসে আছে। কাছে যেতেই শিশির বললো, "দেখি বিছানায় উঠে পা দুখানি এদিকে দাও গো একটু।" সোনেলা অবাক হয়ে বললো কেনো। শিশির বললো, এতো কথা বলো কেনো দাওনা গো প্লিজ। সোনেলা আর কথা না বাড়িয়ে পা দুখানি এগিয়ে দিলো।
শিশির শাড়ির ব্যাগটি থেকে এক জোড়া পায়েল বের করে সোনেলার দু পায়ে পরিয়ে দিলো। তার পর এক গোছা নীল আর লাল চুড়ি বের করলো। তার পর দুই ভাগ করে এক সাথ করে সোনেলার দুই হাতে পরিয়ে দিলো। সোনেলা বিস্ময়াবিষ্ট হয়ে গেছে। কারন সে সত্যিই এই চুড়ি আর পায়েল পছন্দ করেছিলো দোকানে। কিন্তু নীলা কিছু ভাববে ভেবে নেয়নাই। যদিও সামান্য দাম কিন্তু শিশির এই ছোট্ট ব্যাপারগুলাও খেয়াল করেছে তার। এটা ভেবে সে চুপ হয়ে মাথা নিচু করলো।
শিশির তার থুতনি ধরে মাথাটা উচু করলো। দেখলো সোনেলার চোখে পানি। সোনেলার চোখে চোখ রেখে বললো শিশির, এই পাগলী শুনো। একটু দাঁড়াও তো এবার। সোনেলা উঠে দাঁড়ালো। শিশির সোনেলার পরনের শাড়িটি খুলে, আস্তে আস্তে সুন্দর করে নতুন কেনা শাড়িটি সোনেলাকে পরিয়ে দেয়। সুন্দর করে কুচি দিয়ে দেয় কোমরে। শাড়ি পরিয়ে সোনেলা কে বলে তুমি শুধুই আমার বেবি। আমি হাজার বছর তোমায় এমনে দেখতে পারি। বলেই সোনেলাকে জড়িয়ে ধরে। সোনেলার চোখে আবারও পানি এসে যায়। তার ছোট্ট বুকে এতো ভালোবাসা সইবে কিভাবে সে। এ পানি যে ভালোবাসার প্রকাশ।
শিশির আবার সোনেলাকে বুকে মিশিয়ে ধরে জোরে, আর বলে তুমি যে আমার জীবনের সবটাই জুড়ে আছো। তোমার চোখের পানি যে আমার সহ্য হয়না।
এই কথাটা শিশির বিয়ের পর থেকে প্রতিদিনই বলে। আর সোনেলা তার জীবনে এই মুহূর্তে গুলাকে অত্যন্ত আবেগ ভরে অনুভব করে। দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে। ভালোবাসার নিবিড় পরশ দুজনের অন্তরকে একদম শীতল করে দেয়।
তারা ঘুমিয়ে পড়ে এক অপার্থিব ভালোলাগা নিয়ে।
--------------------------------------------------------------
হঠাৎ, শিশিরের ঘুম ভেঙে যায়। শিশির নিজেকে আবিস্কার করে সেই ব্যালকনিতে। যে ব্যালকনি থেকে গল্পের শুরু হয়েছিলো। শিশির বুঝে যায় সে স্বপ্ন দেখছিলো এতক্ষণ। শিশিরের দুচোখ জুড়ে আসে অশ্রু। কারন সোনেলা আর কেউ নয়, সোনেলা হলো শিশিরের একান্ত ভালোবাসার মানুষ। সোনেলা যে শিশিরের আত্মার আত্নীয়৷ তাই তো শিশিরের সব গুলা সপ্নেই সোনেলাই থাকে। কারন সে তার সবটুকু ভালোবাসা দিয়ে শুধু সোনেলাকেই ভালোবেসেছিলো। কিন্তু সোনেলা তো শিশিরকে চায়না। সে শিশিরকে ভালোবাসেনা। এসব ভাবতে ভাবতে আর তার দেখা সপ্নের কথা মনে করে দুচোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে যায়। আল্লাহর কাছে দু হাত উঠে প্রার্থনায় যেনো শিশির ফিরে পায় সোনেলাকে কোনো অবৈধভাবে নয় বরং সহধর্মিণী হিসেবেই।
লেখক পরিচিতি: Md. Abidur Rahman (AR Khan), B.S S (Economics), M.B.A (MIS- DU-IBA)
No comments:
Post a Comment