Thursday, December 29, 2022

অনুগল্প- ভাবনা

অনুগল্প- ভাবনা 

সবকিছুই ঠিক ঠাক চলছিলো। রাত ২ টা, শুধু ঘড়ির কাটাটা টিক টিক করে বেসুরো ভাবে বেজে রাতের নিস্তদ্ধতার ব্যাঘাত ঘটাচ্ছিলো। নিশি তাই উঠে যায় বিছানা ছেড়ে। আর একটা টেবিল নিয়ে তার উপরে উঠে ঘড়ির কাটাটা খুলে ফেলে। এবার নিশি শান্তিতে ঘুমানোর ট্রাই করতে লাগলো। কিছুক্ষণ পর নিশির কানের মাঝে ঝিম ঝিম করতে লাগলো। এমন সব চিন্তা তার মাথায় ভর করতে লাগলো যা সে আগে কখনোই ভাবেনাই। 
ভাবনা প্রাচীর 
নিশির কাছে সব কিছুই একটু নতুন নতুন লাগছিলো। শেষ পর্যন্ত সে উপলদ্ধি করতে পারলো যে এই পৃথিবীতে তার কোনো কাজ নেই তাই এত সব ভাবনা তার মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে। আজ তার নিজের কাছেই নিজের বেঁচে থাকার মানে খুঁজে পাচ্ছেনা সে। তাই আজ নতুন করে ঘড়ির কাটার শব্দ ও তার কাছে বেসুরো লাগছিলো। জগতের সব কিছুই আজ তার কাছে অসহ্য লাগছিলো। 

নিশি বিছানা থেকে উঠে ওয়াশরুমে যায়। সেখানে যেয়ে সে আরো অবাক হয়। কারন দেয়ালের মাকড়শাটা নিশিকে দেখে হাসছিলো। নিশি ভয়ে ভয়ে বলে, তুমি আমাকে দেখে হাসো কেনো। মাকড়শা টা বলে, "দেখো নিশি আমার ও কোনো কাজ নেই, সারা দিন তোমার ওয়াশরুমে বসে থেকে মশা ধরে ধরে খাই। অথচ তুমি শুধু বসেই থাকো। তুমি যদি আমাকে নিয়ে ও ভাবতে তাহলে আমাকে মশা খেয়ে থাকতে হতোনা। তোমার ঝাটার বাড়িতে আমার স্থান হতো মৃত্যুকুপে। অথচ তুমি এতই অলস যে ওয়াশরুমে বসে থাকো আর আমি মশা খেতে খেতে তোমায় দেখে হাসি।" 

নিশির চিন্তাগুলো ঝট করে খুলে যায়, নিশি সাথে সাথে হেসে বলে শোন মাকড়শা, তুই যেমন জাল পেতে মশা ধরে খেয়ে বেঁচে থাকিস। আমি এখন থেকে মানুষ ধরে ধরে খেয়ে বেঁচে থাকবো। 

একথা শুনা মাত্রই মাকড়শা সাথে সাথে হাসি বন্ধ করে বাথরুমের দেয়াল বেয়ে বেরিয়ে যেতে লাগলো। নিশি বললো কই যাও তুমি? এবার মাকড়শা বলে আমি এখানে আর থাকতে পারবোনা। কারন আমি তো তোমাকে দেখেই আমার বিনোদন নিতাম এখন থেকে আর বিনোদন নিতে পারবোনা। তাই আমার কাছেও সব কিছু অসহ্য হতে থাকবে। 

নিশি এবার হাসতে থাকে। এখন আর কোনো কিছুই অসহ্য লাগছেনা। নিশি ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এসে ঘড়ির কাটাটা আবার লাগিয়ে দিয়ে শুয়ে পড়ে। এখন সব কিছুই ভালো লাগছে তার কাছে। 



Writer: Md. Abidur Rahman, B.S.S (Economics- Govt. MM College), MBA (IBA- DU) 

Thursday, November 24, 2022

যে স্বপ্ন দেখা কখনোই শেষ হয়না

রাত বাজে ৩ টা,, ৬ তলায় থাকা একটি ব্যালকনি থেকে কেউ একজন রাতের আকাশ দেখছে। পাশের বাসার বিড়াল টি মাঝে মাঝে মিউ মিউ করছে সম্ভবত ব্যালকনিতে কাউকে দেখেই করছে। সামনের বাসার ছাদে ফুটে থাকা হাস্নাহেনা ফুলের সেন্ট আসছে। চাঁদের আলোয় আলোকিত চারিদিক। মায়াময় লাগছে সবকিছু।  ছেলেটি আনমনে সব যেনো দেখছে। যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই রাতের নিরবতা পূর্ণ সৌন্দর্যের প্রেমে মজেছেন কবি সাহিত্যিক রা।  কোনো দিকে খেয়াল নেই। হঠাৎ নিস্তব্ধতা ভেঙে ঘেউ ঘেউ করে উঠলো দূরের দুটি কুকুর। 


এমন সময়-- "শিশির, ঐ শিশির! তুমি কই?" রুমের ভেতর থেকে ডাক দিয়ে বললো একটি মেয়ে। 

ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটি জবাব দিলো এইতো ব্যালকনিতে। 

ভেতর থেকে আর জবাব এলোনা। কিছুক্ষণ পরে একটি মেয়েলী ছায়া রুমের ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে প্রশ্ন করলো, এই এতো রাতে এখানে কেনো। শরীর খারাপ করবে, ভেতরে চলো। বলে জবাবের অপেক্ষা না করেই একরকম টানতে টানতে ছেলেটিকে ভেতরে টেনে নিয়ে গেলো। 

এতক্ষণ যাদের কথা বলছিলাম, তারা হলো সোনেলা আর শিশির। দুজনে বিয়ে করেছে সম্প্রতি। একই সাথে পড়তো দুজনেই। চোখাচোখি, বন্ধুত্ব, ভালোলাগা,,লুকোচুরি,, প্রণয় তার পর বিবাহ। ফলস্বরূপ দুই পরিবারের কেউই পুরোপুরি মেনে নেয়নি। তবে পরিস্থিতি বুঝাচ্ছে যে মেনে নিবে একসময়। তাদের সংসার খারাপ চলছেনা। শিশির জব করে, তাতে যা স্যালারি আসে, তাতে ভালোভাবেই চলে যায় দিন। বাসাভাড়া, খাওয়া দাওয়া সব মিলিয়ে ২০ হাজার টাকার মতো লাগে দুজনের সারা মাসে। 


হাতে সামান্যই থাকে তবুও শিশির একে একে সোনেলার পছন্দ গুলা পুরণ করার চেষ্টা করে। সোনেলা কিছুই চায়না প্রয়োজনের বাইরে।  অফিস থেকে আসার পরেই ফ্রেশ হয়ে শিশির সোনেলাকে বলে চলো একটু হেটে আসি। সোনেলাও ঝটপট রেডি হয়ে নেয়। বাসা থেকে বের হয়ে সোনেলাকে ফুচকা খাওয়ায় কোনোদিন, আবার কোনোদিন বা আইসক্রিম। অথচ শিশির কিছুই খায়না শুধু চা ছাড়া। কারন তার ওগুলা ভালো লাগেনা। মাঝে মাঝে সোনেলা জোর করে খাইয়ে দেয় কিছু। তার পর দুজনে দুজনের হাত মুঠি করে ধরে বাসায় ফিরে আসে৷


শিশির দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে পা ছড়িয়ে, সোনেলা এসে বিছানার অপর প্রান্তে বসে৷ শিশির কিছুক্ষণ পরে সোনেলাকে বলে, এই এদিকে এসো একটু কাজ আছে। সোনেলা মৃদু হেসে তার দিকে এগিয়ে যায়। কারন সে জানে শিশির কি করবে, এটা তার নিত্য দিনের অভ্যেস। 


কাছে গেলেই শিশির সোনেলাকে টেনে শুইয়ে দিবে কোলের উপর। তার পর মাথার চুল গুলা খুলে দিবে। আস্তে আস্তে চুলে বিলি কাটবে আর গল্প করবে। আর একে একে প্রশংসা করবে সোনেলার চোখের। টুপ করে মুখ নিচু করে দু চোখে চুমু খাবে আর বলবে, তোমার চোখেই যে আমার মরন হয়ে যাবে গো ঘুমবেবি। সোনেলাকে অনেক আদুরে নামে ডাকে শিশির। 

সোনেলা কৃত্তিম রাগ দেখিয়ে, মুখ ঘুরিয়ে বলবে- ধ্যাত, খালি আদিখ্যেতা, ভাল্লাগেনা। 

শিশির আবার তাকে জাপটে ধরবে। মুখ ফিরায় নিবে তার পর সারা মুখে চুমু দিয়ে ভরে দিবে। আস্তে আস্তে সোনেলার মিথ্যা রাগ ভাঙ্গাবে। 


এক বছর কেটে যায়। নভেম্বর মাস। বাচ্চা কনসিভ করেছে সোনেলা। শিশির খুব খুশি। সোনেলাকে বলে মাত্র বাচ্চা কনসিভ হয়েছে, সময় থাকতে চলোনা পাগলী ঘুরে আসি চট্টগ্রাম। সোনেলা খুব খুশি হয়ে যায়।

১১ই নভেম্বর, শিশির সেদিন রাতের টিকিট কাটে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে। রাত ১০:৪৫ এ গাড়ি। আরামবাগ কাউন্টার থেকে, Soudia Mercedes-Benz এ। সোনেলার আনন্দ যেনো আর ধরেনা। কারন সে এর আগে সাগর আর পাহাড় ছবিতেই দেখেছে শুধুমাত্র। আর সোনেলার আনন্দ দেখে শিশিরের মন পাগল হয়ে যাচ্ছে। রাত ৮:৩০ এ বাসা থেকে বের হয়ে দুজনে উবার নিয়ে চলে গেলো বাস কাউন্টারে। 


শিশির দু প্যাকেট চিপস কিনলো, সাথে কোকাকোলা। গাড়িতে উঠার সাথে সাথেই শুরু হলো বৃষ্টি। সৌদিয়া বাস তার ক্ল্যাসিকাল স্পিডে চলা শুরু করলো। সোনেলা প্রচন্ড ভাবে ফিল করছিলো তার সময় গুলা। শিশিরের গায়ে মাথা রেখে বললো- "আচ্ছা শিশির আমি তোমার কে হই।"

 শিশির তার মাথা তুলে দিলো। তার পর সোনেলার মুখ খানি নিজের দিকে ফিরিয়ে চোখে চোখ রেখে বললো, "তুমি আমার অক্সিজেন। আমার সবটুকুই তুমি। তুমি শুধু আমার কলিজার টুকরাই নও বরং পুরো কলিজাটাই তুমি।" 

সোনেলার দুচোখে পানি, শিশির তার হাত দিয়ে পানি গুলা মুছে এনে নিজের মুখে মাখিয়ে নিলো। বললো, "এই পাগলী! কান্না করোনা, তোমার কান্না আমার সয়না লক্ষীটি, আমার বুক ভেঙে যায়, প্লিজ একটু হাসো।" ফিক করে হেসে দিলো সোনেলা। শিশির ও সোনেলাকে আলতো করে জড়িয়ে ধরলো। রাতের বৃষ্টি ভেজা পথ দিয়ে সাই সাই করে গাড়ি ছুটে চলছে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে। 


রাত প্রায় ৪ টার দিকে চৌদ্দগ্রাম টাইমস্কয়ার হাইওয়ে রেস্টুরেন্টে গাড়ি থামলো ২০ মিনিটের জন্য। সোনেলা আর শিশির ও নামলো। সোনেলার হাত ধরে শিশির লেডিস ওয়াশরুমের সামনে এলো। সোনেলা ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এলো। দুজনে মিলে হালকা কিছু নাস্তা করলো। যদিও বুফে ফ্রি ছিলো টিকিটের সাথেই। কিন্তু শিশির আর সোনেলা সবসময়ই সংযমি। তার পর রেস্টুরেন্টের বাইরে এলো। এখন আর বৃষ্টি নেই। এমনিতেই শীতের শুরু তার উপরে বৃষ্টি, তাই প্রচুর কনকনে বাতাস। সোনেলা হালকা কাপছিলো।  শিশির দু কাপ কফি নেয়। দুজনেই গরম কফিতে চুমুক দিয়ে গরম আর ঠান্ডার ফিলিংস নিতে থাকে। কফি শেষ করে একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে হাসে। শিশির বলে, "শুনো তোমার হাসিতে আমি আবার পাগল হয়ে যাবো। এতো মুগ্ধতা মায়া কেনো গো তোমার হাসিতে।" 

সোনেলা লজ্জা পেয়ে আবার কৃত্তিম রাগের অভিনয় করে ধাক্কা দেয় শিশিরকে আর বলে, "চলো গাড়িতে উঠি। সময় শেষ"

------------------------------------------------------------


সকাল ৭ টার দিকে চট্টগ্রাম পৌঁছে গাড়ি। অলঙ্কার কাউন্টারে নেমে দুজনে সিএনজি নিয়ে চলে যায় টেকনিক্যাল মোড়ে। সেখান থেকে একটু দূরেই শিশিরের মামার বাসা। এই মামা অবশ্য শিশিরের বিয়ের কথা শুনার পর থেকেই পারিবারিক ভাবে দুজনকে এক করার চেষ্টা করছিলেন। তাই তার বাসায় যেতে শিশিরের সমস্যা নেই। আর আসবার আগেই শিশির আর সোনেলা জানিয়ে এসেছিলো এখানে। 


তারা কিছু মিষ্টি আর ফল কিনে নেয়। তার পরে শিশিরের মামার বাসায় পৌঁছালে সেখানে তারা খুব উষ্ণ ভাবে তাদেরকে স্বাগতম জানায়। এতো আপ্যায়ন দেখে সোনেলা আর শিশির দুজনেই লজ্জা পায়। 


যাই হোক, সারাদিন গল্প, টাইমলি খাওয়া দাওয়া আর এর মাঝে শিশিরের মামাতো বোন নীলার সাথে সোনেলার প্রচুর খাতির জন্মে যায়। সন্ধার দিকে সোনেলা শিশিরকে বলে, "চলোনা একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসি। রাতের শহর টা দেখে আসি।" শিশির রাজি হয়। দুজনে মামা মামিকে বলে বাইরে বের হতে গেলেই নীলা এসে আবদার করে তাকে সাথে নেওয়ার। শিশির কিছু বলার আগেই সোনেলা বলে, "সমস্যা নেই, রেডি হয়ে এসো।" নীলা ১০ মিনিটের মাঝে রেডি হয়ে চলে।এলো। 

তিনজনে একটা সি এন জি নিয়ে চলে এলো দামপাড়া। সেখানে নেমে তারা ঝালমুড়ি খায়। সোনেলা আর নীলা যেনো মনে হচ্ছিলো দুই বান্ধবী। শিশির যে সাথে আছে তার কথা যেনো মনেই নেই। রাস্তায় পাশে থাকা হকারের কাছ থেকে সোনেলা এটা ওটা দেখে, এক গোছা লাল চুড়ি, নীল চুড়ি দেখে। তার পরে একটা পায়েল দেখে। হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখার পর সোনেলা কিছুই নেয়না, সব ফিরিয়ে দেয় দোকানীকে। শিশির সবই লক্ষ্য করে কিন্তু কিছুই বলেনা। ওদিকে নীলা এক গোছা চুড়ি নেয়, তার পর চুল বাধা ফিতা নেয়। নীলা বিল দিতে গেলেই সোনেলা বাধা দেয় বলে, আজ তোমার ভাইয়া আছে ভাইয়া দেবে- এই ভাইয়া বিল দাও। শিশির সোনেলার মাথায় গাট্টা মেরে বলে নীলাকে পেয়েই আমাকে ভাইয়া বলা হচ্ছে, বলে হেসে বিল দেয় দোকানীকে৷ তার পর সোনেলাকে বলে তুমি কিছু নিবেনা। সোনেলা বলে নাহ, লাগবেনা। 


তার পর তারা ফুচকার দোকানে বসে। সোনেলা আর নীলাকে ফুচকা দিতে বলে শিশির বলে আমি একটু আসছি, বলে চলে যায়। শিশির যেতেই সোনেলা ভাবে, "কোথায় গেলো ও,"  তার পর আবার মনে মনে ভাবে হয়তো চাপ বেড়েছে। 


তাদের খাওয়া হতে না হতে শিশির ফিরে আসে। তার পর নীলা আর সোনেলার হাতে দুটা প্যাকেট ধরিয়ে দেয়। শিশির নীলা কে বলে, "এই প্যাকেটে তোমার জন্য একটা জামা, আর মামার জন্য একটা পাঞ্জাবী আর মামির জন্য একটা শাড়ি আছে। কখনোতো আগে দেওয়া হয়নাই তাই আজ দিলাম।" নীলা এক গাদা সংকোচভরা গালে বলে, "ভাইয়া কি দরকার ছিলো এসবের।" সোনেলা নীলার পিঠ চাপড়ে দেয় আর বলে, "আরে সমস্যা নেই।" নীলা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। 

তার পর শিশির সোনেলা কে বলে, "তোমার জন্য ও একটি শাড়ি আছে, বাসায় যেয়ে দেখিও"


ঐ রাতে তারা বাসায় ফিরে আসার পরে ফ্রেশ হয়ে রাতের খাবার খেয়ে নেয়। শিশির আর সোনেলাকে নীলা তার রুমটাই ছেড়ে দিলো। সে যেয়ে তার স্টাডিরুমে, সাময়িক রেস্ট নেওয়ার সিঙ্গেল রুমে ঘুমিয়ে গেলো। এদিকে সোনেলা রুমে আসতেই দেখলো শিশির তাকে দেওয়া শাড়ির প্যাকটি হাতে ধরে বসে আছে। কাছে যেতেই শিশির বললো, "দেখি বিছানায় উঠে পা দুখানি এদিকে দাও গো একটু।" সোনেলা অবাক হয়ে বললো কেনো। শিশির বললো, এতো কথা বলো কেনো দাওনা গো প্লিজ। সোনেলা আর কথা না বাড়িয়ে পা দুখানি এগিয়ে দিলো। 

শিশির শাড়ির ব্যাগটি থেকে এক জোড়া পায়েল বের করে সোনেলার দু পায়ে পরিয়ে দিলো। তার পর এক গোছা নীল আর লাল চুড়ি বের করলো। তার পর দুই ভাগ করে এক সাথ করে সোনেলার দুই হাতে পরিয়ে দিলো। সোনেলা বিস্ময়াবিষ্ট হয়ে গেছে। কারন সে সত্যিই এই চুড়ি আর পায়েল পছন্দ করেছিলো দোকানে। কিন্তু নীলা কিছু ভাববে ভেবে নেয়নাই। যদিও সামান্য দাম কিন্তু শিশির এই ছোট্ট ব্যাপারগুলাও খেয়াল করেছে তার। এটা ভেবে সে চুপ হয়ে মাথা নিচু করলো। 

শিশির তার থুতনি ধরে মাথাটা উচু করলো। দেখলো সোনেলার চোখে পানি। সোনেলার চোখে চোখ রেখে বললো শিশির, এই পাগলী শুনো। একটু দাঁড়াও তো এবার। সোনেলা উঠে দাঁড়ালো। শিশির সোনেলার পরনের শাড়িটি খুলে, আস্তে আস্তে সুন্দর করে নতুন কেনা শাড়িটি সোনেলাকে পরিয়ে দেয়। সুন্দর করে কুচি দিয়ে দেয় কোমরে। শাড়ি পরিয়ে সোনেলা কে বলে তুমি শুধুই আমার বেবি। আমি হাজার বছর তোমায় এমনে দেখতে পারি। বলেই সোনেলাকে জড়িয়ে ধরে। সোনেলার চোখে আবারও পানি এসে যায়। তার ছোট্ট বুকে এতো ভালোবাসা সইবে কিভাবে সে। এ পানি যে ভালোবাসার প্রকাশ। 


শিশির আবার সোনেলাকে বুকে মিশিয়ে ধরে জোরে, আর বলে তুমি যে আমার জীবনের সবটাই জুড়ে আছো। তোমার চোখের পানি যে আমার সহ্য হয়না।

এই কথাটা শিশির বিয়ের পর থেকে প্রতিদিনই বলে। আর সোনেলা তার জীবনে এই মুহূর্তে গুলাকে অত্যন্ত আবেগ ভরে অনুভব করে। দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে। ভালোবাসার নিবিড় পরশ দুজনের অন্তরকে একদম শীতল করে দেয়। 

তারা ঘুমিয়ে পড়ে এক অপার্থিব ভালোলাগা নিয়ে। 

--------------------------------------------------------------

হঠাৎ, শিশিরের ঘুম ভেঙে যায়। শিশির নিজেকে আবিস্কার করে সেই ব্যালকনিতে। যে ব্যালকনি থেকে গল্পের শুরু হয়েছিলো। শিশির বুঝে যায় সে স্বপ্ন দেখছিলো এতক্ষণ।  শিশিরের দুচোখ জুড়ে আসে অশ্রু। কারন সোনেলা আর কেউ নয়, সোনেলা হলো শিশিরের একান্ত ভালোবাসার মানুষ। সোনেলা যে শিশিরের আত্মার আত্নীয়৷ তাই তো শিশিরের সব গুলা সপ্নেই সোনেলাই থাকে। কারন সে তার সবটুকু ভালোবাসা দিয়ে শুধু সোনেলাকেই ভালোবেসেছিলো। কিন্তু সোনেলা তো শিশিরকে চায়না। সে শিশিরকে ভালোবাসেনা। এসব ভাবতে ভাবতে আর তার দেখা সপ্নের কথা মনে করে দুচোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে যায়। আল্লাহর কাছে দু হাত উঠে প্রার্থনায় যেনো শিশির ফিরে পায় সোনেলাকে কোনো অবৈধভাবে নয় বরং সহধর্মিণী হিসেবেই।

লেখক পরিচিতি: Md. Abidur Rahman (AR Khan), B.S S (Economics), M.B.A (MIS- DU-IBA)

গল্পঃ মাতৃরুপি বোন (Short Story)

নিলিমা কে খেলার মাঠের দিকে আসতে দেখেই শুভ দ্রুত হেটে তার দিকে গেলো আর বললো, আপু তোকে না বলেছি, আমি যখন মাঠে খেলবো তুই আসবিনা। তোর এক চোখ নেই দেখতে খুব বিশ্রি লাগে। আমার বন্ধুদের সামনে আমার লজ্জা লাগে। 

নিলিমা মন খারাপ করে বাসায় ফিরে গেলো। আসলে ছোটো ভাইয়ের খেলা দেখতে তার ভালোই লাগে। কিন্তু তার ছোটো ভাই শুভ তাকে দেখলেই এমন বিহ্যাভ করে। 

নিলিমা ঘরে এসে কান্না করতে থাকে। তার মনে পড়ে যায় ১০ বছর আগের কথা। যখন শুভ মাত্র চার বছর বয়সের। একদিন খেলতে খেলতে শুভ'র বাম চোখে একটা কঞ্চির মাথা ঢুকে যায় আর তার চোখটি অন্ধ হয়ে যায়। সবাই সেদিন শুভকে নিয়ে হাসপাতালে। ডাক্তার বললেন চোখ ট্রান্সপ্লান্ট করা পসিবল। কিন্তু কে শুভ কে চোখ দিবে। সবাই শুভ'র কেবিনে শুভকে ঘিরে কান্না করছে। এমন সময় নিলিমা বললো মা, আমি চোখ দিবো। আমার ভাইকে আমি জীবনের চেয়েও ভালোবাসি। আমার এক চোখ দিয়ে হলেও আমার ভাইকে আমি সুন্দর দেখতে চাই। নিলিমা কোনো বুঝ ই শুনলোনা। শেষ পর্যন্ত নিলিমার এক চোখের বিনিময়ে শুভ ফিরে পেলো দুই চোখ ভরে পৃথিবী দেখার অধিকার। 

নিলিমার অনুরোধ রাখতে গিয়ে কেউই শুভ কে বলে নাই যে তার ছোটো বয়সে ওমন কিছু হয়েছিলো। তাই শুভ ভুলে গিয়েছে সব সময়ের সাথে সাথে। 

সেদিন শুভ বাসায় ফিরে এসে রাতে খাওয়ার টেবিলে মা'কে বলে, "মা তোমার মেয়ে যেনো যখন তখন আমার বন্ধুদের সামনে না যায়। আর খেলার মাঠে যখন আমি খেলি ও যেনো না যায়।"

মা বললেন কেনো?

শুভ বললো ও গেলে সবাই কেমন চোখে তাকায়। আর আমার লজ্জা লাগে। আর বলোতো মা ওর এক চোখ নেই এটা দেখলে তো আমারই বিশ্রি লাগে। ও সবার সামনে ওভাবে না যেয়ে ঘরে বসে থাকলেই তো পারে।

নিলিমার চোখে পানি আটকালোনা, তবুও বললো। আচ্ছা ভাই। যাবোনা। তুই খেলিস। আমার চোখ নাই, দেখতে বিশ্রি লাগে আমি জানি। তাই আসলে আমার যাওয়াটাই ভুল হয়েছিলো। চুপ করে খেয়ে নে ভাই। 

শুভ এরপরেও বলে, "শুন আপু আমার রুমেও রাত বিরাত আসবিনা। আর আসলেও বলে ঢুকবি। কারন হঠাৎ তোকে দেখলে আমার কেমন যেনো লাগে।"

নিলিমার চোখের পানি আরো বাড়লো, বললো ঠিক আছে ভাই। তোর ইচ্ছা মতই সব হবে। 

এতক্ষণ সব কথা শুনলেন তাদের মা বাবা। কিছুই বললেন না। খাওয়া শেষ করে, শুভকে ডাকলেন মা বাবা। তার পরে প্রথমে নিলিমার একটা ছবি দেখালেন। শুভ বললো হায় আল্লাহ, এটা নিলিমা। তাইলে তার আরেক চোখ কই গেলো এখন। তখন তো দেখছি দুটা চোখ ই আছে। এখন কেনো নেই।

উত্তরে মা কিছু বললেন না।। তিনি  আরেকটা ছবি দেখালেন তাতে দেখা যাচ্ছে, শুভ'র ছোট্ট বেলার একটা ছবি তাতে মা বাবা নিলিমা সবাই তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে হসপিটালের একটা বেডের পাশে। যেখানে শুধুমাত্র শুভ'র এক চোখ নেই। কিন্তু মা, বাবা, নিলিমা সবার চোখ ঠিক আছে। 

শুভ শিউরে উঠলো। বললো কিভাবে আমার এ অবস্থা হয়েছিলো। 

এবার মা কথা বললেন। কঞ্চির খোচায় এরকম হয়েছিলো। 

মা আরো একটি ছবি বের করলেন তাতে দেখা যাচ্ছে আগের মতোই সবাই শুভ'র বেডের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। শুভর কানা চোখে একটি নতুন চোখ লাগানো হয়েছে। কিন্তু এবারের ছবিতে নিলিমার এক চোখ নেই। 

শুভ ঘামতে লাগলো। সে মা কে বললো মা, আমার চোখ কিভাবে ফিরলো। আর নিলিমা আপুর চোখ কই গেলো। 

মা আর জবাব দিলেন না। মায়ের দু গাল বেয়ে পানি পড়তে লাগলো। শুভ তাকিয়ে দেখে বাবা ও কান্না করছেন। 

শুভ সব বুঝে গেলো এক নিমিষে। এক দৌড়ে সে নিলিমার ঘরে চলে গেলো। নিলিমা ঘুমিয়ে গিয়েছিলো। শুভ যেয়েই নিলিমাকে জড়িয়ে ধরলো, আর কান্না করতে লাগলো। শুভ'র ধাক্কায় নিলিমার ঘুম ভেঙে গেলো। সে উঠে বসে শুভকে বুকে টেনে নিলো আর বললো কি হইছ ভাই। এভাবে কান্না করছিস কেনো। কিছু দেখ ভয় পাইলি না-কি। 

শুভ বলল, না আপু। শুধু একটা জবাব দাও। কেনো তুমি আমাকে সুন্দর করতে গিয়ে নিজে অসুন্দর হয়ে গেলে। নিলিমার দুচোখে জল চলে এলো। সে কিছুই বলতে পারলোনা। সে শুভ'র চোখের পানি মুছে দিলো নিজের ওড়না দিয়ে, আর শুধু বললো তুই যে আমার কলিজার টুকরা ভাই৷ 

পরদিন থেকে দেখা গেলো। নিলিমার হাত ধরে শুভ খেলার মাঠের এক কোনে বসে আছে। আর দুজনে মিলে সকলের খেলা দেখছে। নিলিমা অনেক বুঝিয়েও শুভকে খেলতে পাঠাতে পারলোনা। কারন সে আজকে আর খেলার মাঝে নয় বরং তার আপুর হাসিতেই আনন্দ খুঁজে পেয়েছে। 

পৃথিবীর সকল বোনদের প্রতি লেখকের শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা। 

গল্পঃ নিশাচর। (Horor Short Story)

টাইপ- অনুগল্প।

মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলো শিশিরের। কেমন যেনো একটা খস খস আওয়াজ হচ্ছে পাশের রুমে। শিশির উঠে বসে বিছানায়। সে ভাবে পাশের রুমে থাকা তার ভাইয়া ভাবি সম্ভবত উঠে কোনো কাজ করছেন। এমন সময় তার মনে পড়ে ভাইয়া ভাবি তো নেই। তারা সবাই তো বেড়াতে গেছেন দুইদিন পরে আসবেন। এই বাসায় তারা সম্প্রতি উঠেছে। চার তলার উপরে সিমসাম একটা ফ্লাট।

তো যাই হোক, শিশির ভাবলো উঠে দেখে আসি কিসে শব্দ করছে। শিশির হাতড়িয়ে তার মোবাইল টা খুঁজে। তার পর মোবাইল টা নিয়ে নিজের রুমের দরজা খু


লে তার ভাইয়া ভাবির রুমে যেয়ে আলো জ্বালতেই দেখে একটা বৃদ্ধ কঙ্কালসার মানুষ বসে আছে, দেখতে খুবই ভয়ানক। চোখ দুটি জ্বলছে লাল টকটকে হয়ে, লোকটি কঙ্কালসার হলেও তার গলার কাছ টায় কাটা সেখান দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। শিশির কিছু ভেবে উঠার আগেই লোকটি শিশিরের দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। শিশির ভয়ে জ্ঞান হারানোর উপক্রম সে তাড়াতাড়ি তার নিজের রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয়। আর ভাবে কি হচ্ছে এসব স্বপ্ন দেখছে না তো। 

শিশির তার রুমের লাইট জ্বালাতে যায়। কিন্তু লাইট জ্বলছেনা। অথচ ফ্যান চলছে ঠিকই। শিশিরের রুমের সাথে একটা ব্যালকনি আছে। হঠাৎ সেদিকে নজর যায় শিশিরের। শিশির দেখতে পায় একটা লোমস শরীরের গরিলার মতো কেউ দাঁড়িয়ে আছে। শিশিরের দিকে লোমস শরীরের জীবটি তাকিয়ে হেসে দেয়। শিশির দেখতে পায় জীবটি আসলে ব্যালকনিতে নয় বরং সে ব্যালকনি সমান উচু। চার তলা বাসার নিচে থেকেই হয়তো দাঁড়িয়ে আছে। 

সে দিকে তাকিয়ে শিশিরের সারা শরীর যেনো গুলিয়ে যায়। ধপাস করে নিচে বসে পড়ে, হঠাৎ দেখতে পায় খাটের নিচে একটা মেয়ে বসে আছে। মেয়েটার চোখ গুলাও লাল হয়ে আছে। আর তার গালের পাশে বিশাল একটা গর্ত। নিকষকালো অন্ধকারেও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে সব কিছু। শিশির জ্ঞান হারায়। 

পরের দিন সকালে শিশিরের জ্ঞান ফিরে আসে নিজে থেকেই। তার ভাইয়া ভাবি তখনও আসেনাই। শিশির ভাবে এখন দিনের বেলা, রাতে কি সব স্বপ্ন দেখলাম। কারন শিশির অনেক সাহসী এ কথা সত্য। শিশির হাত মুখ ধুতে যায়। ওয়াশরুমের আয়নায় নিজেকে দেখতে থাকে। তখনই শিশিরের চোখের সামনে আয়নার ভেতরে কালকের সেই মেয়েটার ছবি দেখা যায়। শিশির যেই কিনা থুথু ফেলতে যায় বেসিনে সেই আয়না থেকে মেয়েটার একটা হাত বেরিয়ে আসে। শিশিরের মুখে প্রবল জোরে একটা থাপ্পড় দেয় মেয়েটা। শিশির প্রচন্ড ভয় পেয়ে চলে আসে আর কিচেন থেকে হাত মুখ ধুয়ে নেয়।

এখন শিশির আকাশ পাতাল ভাবতে শুরু করে। সে ভাবে এই ঘরে অশরীরী আত্মা আছে, কিন্তু কিভাবে আছে। কেনো আছে। কারন শিশির জানে যে এই সকল আত্মারা হয় কোনো প্রয়োজনে অথবা কোনো সুযোগ পেলেই থাকে। হয় তাদের প্রয়োজন পূর্ণ করে দিলে অথবা তাদের থাকার সুযোগ নষ্ট করে দিলে তারা থাকতে পারেনা। 

শিশির দিনের বেলাতে প্রতিটা রুম খুঁজতে থাকে। শেষ পর্যন্ত কিছুই পায়না। তখন সে অন্যান্য ফ্লাটে সবাইকে জিজ্ঞাসা করে, কিন্তু সবাই বলে তোমার দেখার ভুল। আর সকলের কাছে জিজ্ঞাসা করে শিশির বুঝে যায় তাদের ফ্লাটের ভাড়া মাত্র হাফ অন্যান্য ফ্লাট থেকে।। শিশির বুঝে যায় যে শুধুমাত্র এই ফ্লাটেই সমস্যা আর এ জন্যই ভাড়া কম। কারন কেউ ই এই ফ্লাটে এসে থাকতে পারেনা। 

শিশির বাড়ির দারোয়ানের কাছে তাদের ফ্লাট নিয়ে জিজ্ঞাসা করে। 

দারোয়ান বলে, "তেমন কিছুই জানিনা। শুধু আজ থেকে ১১ বছর আগে ঐ ফ্লাট থেকে এক ভাড়াটিয়া পরিবার সবাই উধাও হয়ে যায়। তাদের লাশও পাওয়া যায়না যে নিশ্চিত হবে তারা নিহত। অথবা তারা কোথাও গেছে কিনা সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী সেটাও পাওয়া যায়না। অবশ্য আমাদের মালিক অনেক টাকা পয়সা খরচ করে ব্যাপারটা নিয়ে আর অগ্রসর হতে দেননি পুলিশ কে, কারন তাতে অন্যান্য ফ্লাটের সদস্য হারাতে হতো হয়তোবা।"

শিশিরের মনে খটকা লাগে। সে তার এক PBI এ চাকরি করা বন্ধুকে সব খুলে বলে। তার বন্ধু খুবই এক্সাইটেড ছিলো। ঐ দিনই সে শিশিরদের বাসায় চলে আসে। আর শিশিরের বাসার সব যায়গায় তন্নতন্ন করে খুঁজে। কিন্তু কিছুই পায়না। এমন সময় তাদের নজরে পড়ে আলমারির রাখার যায়গাটা। কারন যেখানে আলমারির রাখা সেই দেওয়াল টা অনেক উচু। দেখেই মনে হচ্ছে খুবই ODD, অথচ কোনো কারন ছাড়া এরকম দেয়াল উঁচু রাখার কোনো প্রয়োজন ছিলোনা। তখন শিশিরের ঐ বন্ধু তার ডিপার্টমেন্ট এ জানায়। পিবিআই তাদের টিম নিয়ে এসে হাজির। তারা দেওয়ালের ঐ অংশ ভেঙে সবাই তাজ্জব হয়ে যায়৷ কারন সেখানে তিনটি কঙ্কাল। একজন সিনিয়র অফিসার দেখেই বললেই এখানে একটি বৃদ্ধ, একটি যুবতি মেয়ে আর একটি যুবক ছেলের কঙ্কাল। 

বাড়ির মালিক ও সব শুনে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসলো। কিন্তু পিবিআই কর্মকর্তা গন তাকে গ্রেফতার করে নিলেন। 

পরে জিজ্ঞাসাবাদে বাড়ির মালিক সবকিছুই স্বীকার করে নিলেন যে এই খুনে তার হাত ছিলো। 

তবে সেদিনের পর থেকে শিশিরের সাথে বা আর কারো সাথে ঐ ফ্লাটে কোনো অস্বাভাবিক কিছুই ঘটেনাই